Call or text | +880-1896267000

জমি ক্রয় নীতি

জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার করণীয়:

  • জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাৎ খতিয়ান ও নকশা যাচাই করা।
  • জমির মৌজা, জেএল নম্বর, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে মোট জমির পরিমাণ যাচাই করা।
  • জমি ক্রয় করার আগে উক্ত জমির সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড, আর এস রেকর্ড অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট সকল রেকর্ড এবং প্রয়োজনে মাঠ পর্চাগুলো ভালোভাবে যাচাই করা।
  • বিক্রেতা যদি জমিটির ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে থাকেন, তবে তার ক্রয়ের দলিল, রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা যথাযথ আছে কি না, তা যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া।
  • জমির বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে কিংবা নামজারি খতিয়ানে তার নাম আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ বা নামজারি খতিয়ানে তার নাম না থাকে, তাহলে উক্ত বিক্রেতা যার কাছ থেকে জমিটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন অর্থাৎ পিতা বা পরিবার থেকে পেলে পারিবারিক বণ্টননামা আছে কি না, কিংবা তা না থাকলে সেক্ষেত্রে মূল মালিকের সঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র বা রক্তের সম্পর্ক আছে কি না, এবং প্রাপ্য স্বত্বের অংশ নিশ্চিত হওয়া।
  • জমি বিক্রেতার কাছ থেকে বিক্রয় সংশ্লিষ্ট কাগজাদি যেমন: সকল প্রকার দলিল, খতিয়ান, খাজনার দাখিলা বা রশিদ, মাঠ পর্চা ইত্যাদির কপি সংগ্রহ করে দলিলগুলো সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কিংবা প্রয়োজনে জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে ও মাঠপর্চা, জরিপ খতিয়ানগুলো জরিফ অফিসে এবং নামজারি খতিয়ান, খাজনার দাখিলা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।
  • ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনা বকেয়া আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে। বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনাসহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের দায়দায়িত্ব ক্রেতার ওপর বর্তাবে। একই সঙ্গে অধিক সময়ের খাজনা বকেয়া থাকলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি খাজনা অনাদায়ে সরকারের খাস সম্পত্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারে।
  • উপজেলা ভূমি অফিস বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে জমি ক্রয় করার পূর্বে উক্ত জমি অর্পিত/পরিত্যক্ত/দেবোত্তর/খাস/সরকারিভাবে বিক্রয় নিষিদ্ধ সম্পত্তির তালিকাভুক্ত কি না কিংবা উক্ত জমি অধিগ্রহণভুক্ত কি-না বা অধিগ্রহণের আওতাধীন কি-না, তা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা হতে জেনে নিতে হবে।
  • সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কিংবা জেলা রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সর্বশেষ জমি বেচা-কেনার তথ্য জেনে নিতে হবে।
  • যে জমিটি বিক্রি হতে যাচ্ছে, সেই জমিটি ঋণের দায়ে ব্যাংকে দায়বদ্ধ কি না, সেই বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে।

জমি ক্রয়ের পর ক্রেতার যা করণীয়ঃ

  • দলিল রেজিস্ট্রির পর কোনো আমিন/সার্ভেয়ার দ্বারা ক্রয়কৃত জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে আগের মালিকের কাছ থেকে দখল বুঝে নিতে হবে।
  • জমিতে দখল প্রতিষ্ঠা/প্রমাণের জন্য জমির প্রকৃত ব্যবহার তথা চাষাবাদ, গাছ রোপণ, ঘরবাড়ি নির্মাণ ইত্যাদি করতে হবে এবং সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।
  • যেহেতু মূল দলিল প্রাপ্তি সময়সাপেক্ষ বিষয়, সেহেতু দলিল সম্পাদনের পর দলিলের নকল উত্তোলন করে দ্রুত সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন জানাতে হবে এবং ক্রেতার নামে নামজারি/মিউটেশন করে নিতে হবে। কেননা, দখল ও নামজারি করতে দেরি করলে অসাধু বিক্রেতা ক্রেতার ক্রয়কৃত জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিতে পারেন।
  • সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কার্যালয়ে নামজারি হলে নামজারি খতিয়ান এবং ডিসিআর সংগ্রহ করতে হবে। নামজারি খতিয়ান মূলে নতুন হোল্ডিংয়ে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ করে রসিদ নিতে হবে। আগে এই রসিদ ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে সংগ্রহ করা যেত, তবে বর্তমানে অনলাইনেই খাজনা পরিশোধ করা যায়। উক্ত প্রদত্ত খাজনার রসিদ কপি সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
  • নিয়মিতভাবে প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করতে হবে। তিন বছরের বেশি বকেয়া থাকলে সার্টিফিকেট মামলা হওয়াসহ জমি খাস হয়ে যেতে পারে।
  • সময়মতো রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হবে।